যারা স্বপ্নে খেতে দেখেন সেটা স্বেচ্ছায় হোক, কারও কাছ থেকে নিয়ে হোক অথবা কেউ জোর করে খাইয়ে দেয়- এমন হোক, তাদের জন্য এই পোস্ট। টুকরো টুকরো কিছু অভিজ্ঞতার ফসল এটা। কাজেই এর কোন রেফারেন্স হবে না। তাই যার সন্দেহ হবে তার আমল করার দরকার নেই।
দুই ধরনের ব্যাপার হতে পারে।
ক. স্বপ্নে খাওয়া নিয়মিত ঘটনা নয়। অনেকদিন পর পর দেখেন। দেখার পরেও তেমন কোন অনুভূতি হয় না। সাধারন স্বপ্নের মতই মনে হয়। শারিরিক ও মানসিক কোন সমস্যা নেই।
এমন হলে ইন শা আল্লাহ চিন্তার কিছু নেই। অন্যান্য সাধারন স্বপ্নের মতই এটা। ফরজ ইবাদত ও মাসনুন আমল গুরুত্ব দিয়ে করা উচিত।
খ. নিয়মিত স্বপ্নে খেতে দেখেন অথবা প্রায়ই কেউ জোর করে খাইয়ে দেয়।
১। অনুভূতি পুরো বাস্তব মনে হয়।
২। ঘুম থেকে উঠার পরেও খাবারের স্বাদ পান মুখে
৩। ঘুম থেকে উঠে বমি বমি লাগে
৪। পেট ফুলে থাকে/পেট ভরা লাগে
৫। খাওয়ার রুচি একদমই থাকে না
৬। দিন দিন শুকিয়ে কাঠি হয়ে যাচ্ছেন
৭। অন্যান্য শারিরিক ও মানসিক সমস্যা আক্রান্ত। যেমনঃ
i. কারণ ছাড়াই মাথা/ঘাড়/কোমড় ব্যথা
ii. বিকেল/সন্ধার পর থেকেই শরীর খারাপ লাগা
iii. সকালে বিছানা থেকে উঠতে কষ্ট হওয়া
iv. নামায, কুরআন তেলাওয়াতে প্রবল অনীহা
v. সোর্স ছাড়াই সুগন্ধ/দুর্গন্ধ পাওয়া যেটা ঘরের আর কেউ পায় না
আপনি যদি খ ক্যাটাগরিতে পড়েন তাহলে আপনার উচিত হবে এসব সমস্যা গুরুত্ব দেয়া এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। কারও কাছে যেতে হবে না। নিজের চিকিৎসা নিজেই করতে পারবেন ইন শা আল্লাহ।
সাজেশনঃ
১। ঘরে/গায়ে যদি কোন তাবিজ থাকে তাহলে সঠিক নিয়মে নষ্ট করে ফেলা। ব্যবহারের জন্য তওবা করা।
২। কবীরা গুনাহে লিপ্ত থাকলে তওবা করে ফিরে আসা।
৩। ফরজ ও মাসনুন আমল গুরুত্ব দিয়ে করা। মেয়দের জন্য পর্দা করাও ফরজ। মেয়েদের পিরিয়ড হলেও মাসনুন আমল বন্ধ না করা
৪। বেশি বেশি দুআ’ করা আল্লাহর কাছে।
এই চারটা কাজ করলে ইন শা আল্লাহ সমস্যা কমে আসবে। তাই কিছুদিন এই চারটি কাজ করা উচিত এবং সমস্যার উথান/পতন লক্ষ রাখা উচিত। পাশাপাশিঃ
৫। রুকইয়াহর আয়াত তেলাওয়াত করা। প্রতিদিন কমপক্ষে একবার। তেলাওয়াত করতে না পারলে (পিরিয়ড থাকলে, উচ্চারন শুদ্ধ না থাকলে) অডিও শোনা। প্রতিদিন কমপক্ষে ১ থেকে ১.৫ ঘন্টা।
৬। এক বোতল (২ লিটারি) পানি নিন। এরপর সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসী, সুরা আরাফ (১১৭ থেকে ১২২ নং আয়াত), সুরা ইউনুস (৮১, ৮২ নং আয়াত), সুরা ত্বহা (৬৯ নং আয়াত) কয়েকবার করে পড়ুন। এরপর সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস কয়েকবার করে পড়ুন। সবগুলো পড়া শেষ হলে বোতলের পানিতে ফুঁ দিন। এই পানি প্রতিবেলায় আধ গ্লাস করে খাবেন। গোসলের পানিতে আধ গ্লাস করে মিশিয়ে গোসল করবেন প্রতিদিন। শীত লাগলে গরম পানি মেশাবেন। সমস্যা নেই ইন শা আল্লাহ।
৭। স্বপ্নে খেতে দেখলে ঘুম ভাঙার সাথে সাথে উঠে আধ গ্লাস পড়া পানি খেয়ে নিবেন।
৮। অনেক সময় রাতে মাসনুন আমল করে ঘুমালে স্বপ্নে খেতে দেখে না। কিন্তু ফজরের পর ঘুমালে খেতে দেখে। এমন হলে ফজরের পর ঘুমানোর আগে আবার মাসনুন আমল করে নিবেন।
৯। পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে অডীও শুনতে অসুবিধা নেই। পড়া পানি শেষ হয়ে গেলে অন্য কেউ পড়ে দিবে। কাজেই সতর্কতা হল আগেই বেশি করে পানি রেডি করে ফেলা যেন পিরিয়ড শুরু হয়ে গেলে পানি শর্ট না পড়ে। নিজের জন্য নিজেই পানি রেডি করা উত্তম।
১০। পোস্টে যেগুলো বলেছি সেগুলোর লিংকঃ
রুকইয়াহর আয়াতের পিডিএফ (২ নং) ruqyahbd.org/pdf
রুকইয়াহর অডিও (৩, ৭, ৯ নং) ruqyahbd.org/download
মাসনুন আমল facebook.com/groups/ruqyahbd/permalink/940739892779997
১১। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত করবেন। সুস্থ হলে এসব স্বপ্ন দেখা বন্ধ হবে। শারিরিক ও মানসিক সমস্যাগুলোও চলে যাবে ইন শা আল্লাহ। তবে সুস্থ হবার পরেও ১০-১৫ দিন রুকইয়াহ করা উচিত। এরপর ফরজ ও মাসনুন আমল চালিয়ে গেলে ইন শা আল্লাহ আর কোন ঝামেলা হবে না।
বিঃদ্রঃ
১। ডাউনলোড করতে সমস্যা হলে ব্রাউজার পরিবর্তন করে নিন। গুগল ক্রোম, অপেরা মিনি দিয়ে ট্রাই করুন। এরপরও না হলে মোবাইলে ভাল বুঝে এমন কারও হেল্প নিন।
২। কেউ পোস্ট ফলো করলে অবশ্যই অভিজ্ঞতা জানাতে ভুলবেন না। (সাপোর্ট গ্রুপ)
৩। তবে যাদুর সমস্যা যদি প্রবল হয় অথবা ভয়াবহ টাইপের স্বপ্ন দেখেন (জ্বিন, দানবের আক্রমন) তাহলে উপরের সাজেশন ফলো করার পূর্বে একবার ডিটক্স করে নিবেন। এরপর গুরুত্বের সাথে উপরের সাজেশন ফলো করবেন।
ডিটক্স ruqyahbd.org/detox
আল্লাহ তায়ালা এমন সুস্থতা দান করুন যার পর আর কোন অসুস্থতা বাকি না থাকে। আমীন।
তবে এটা নিয়ে বেশি আপসেট হওয়া উচিত না। অতিরিক্ত চিন্তা করলে হয়তো শয়তান স্বপ্ন না দেখাইলেও আপনি দেখবেন, কারণ মানুষ যেটা নিয়ে বেশি চিন্তা করে সেটা স্বপ্ন দেখে। নুসুস ও সালাফদের কওল থেকে যেসব স্বপ্নের কথা পাওয়া যায়, তার মাঝে নিজের ভাবনা থেকে তৈরি স্বপ্নও একটা।