Ruqyah Support BD

জটিল মেডিক্যালিয় সমস্যার জন্য রুকইয়াহ ও পরামর্শ

উদ্দেশ্যঃ প্যারালাইসিস, ক্যান্সার, টিউমার, ডায়বেটিস, হাই ব্লাড প্রেশার প্রভৃতি এবং এই ধরনের জটিল রোগীদের জন্য কিছু পরামর্শ।

চিকিৎসার বিভিন্ন স্টেপঃ

১) তওবা করে আল্লাহর পথে ফিরে আসা। আমলে মনোযোগী হওয়া, তাহাজ্জুদ, সালাতুল হাজত পড়ে আল্লাহর কাছে দুয়া করতে থাকা।

২) রাক্বির সাথে যোগাযোগ সরাসরি রুকইয়াহর ব্যবস্থা করা। রোগীকে রাক্বির কাছে নেয়া পসিবল না হলে রাক্বিকে রোগীর কাছে নিয়ে আসা এবং রাক্বির পরামর্শ অনুসরণ করতে থাকা। সব ধরনের চিকিৎসা শেষ করে নিঃস্ব হয়ে এরপর রাক্বির কাছে নেয়ার চাইতে অন্যান্য চিকিৎসার পাশাপাশি** রাক্বির হেল্প নিন।
আর আপনার তেলাওয়াত সহিহ থাকলে, আক্বিদায় গন্ডগোল না থাকলে, একটু সাহস থাকলে (কাছের মানুষদের জন্য) আপনি নিজেই রাক্বি হতে পারেন। বিস্তারিত পরে বলছি ইন শা আল্লাহ।


**পাশাপাশি বলছি এই কারনে যে,বদনজর, জাদু ও জিনগ্রস্থদের এ ধরনের প্রবলেম হতে পারে। আপনি যদি প্রথমেই রুকইয়াহর আশ্রয় নেন তাহলে ইন শা আল্লাহ আপনি দ্রুত সুস্থ হবে এবং লক্ষ লক্ষ টাকা মেডিক্যাল ট্রিটমেন্টের খরচ বেচে যাবে। সারা দুনিয়ার ডাক্তার গুলিয়ে খাইয়ে দিলেও জিন-জাদুর অসুস্থতা আরোগ্য নাও হতে পারে। একজন দক্ষ রাক্বি ১-২ বার রুকইয়াহ করে ইন শা আল্লাহ বুঝতে পারবেন আক্রান্ত ব্যক্তির সমস্যা কি রুকইয়াহ সংক্রান্ত নাকি শুধু চিকিৎসা শাস্ত্রের বিষয়।


৩) মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট এবং রাক্বির সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি হিজামা করাতে পারেন। এতেও রয়েছে শিফা (ইফা, বুখারী-৯/৫২৮১)। হিজামা কি এবং কিভাবে করে জানতে এই লিংক ফলো করতে পারেন।

লক্ষনীয়, হিজামা করাতে হিজামা স্পেশালিস্টের কাছে যাবেন। নিজেই ছুড়ি, ব্লেড দিয়ে কাটাকাটি শুরু করবেন না।

৪) কালোজিরা ও মধু খাওয়ানো। কালোজিরা ও মধুতে রয়েছে রোগের চিকিৎসা (ইফা, বুখারী-৯/৫২৮১,৫২৮৬)। কাজেই রোগীকে কালোজিরা ও মধু পরিমানমত খাওয়াবেন। কালোজিরাতে যদি পেটে গ্যাস হয় তাহলে খাওয়ার পরে খাওয়াবেন। মধু খাওয়ালে যদি ডায়বেটিস বাড়ে তাহলে দ্বীনি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াবেন।

৫) সাধ্যমত দান-সদকা করা।

.

প্রশ্ন-১: রাক্বির হেল্প নেয়া সম্ভব নয়। আমি নিজে যদি রুকইয়াহ করতে চাই তাহলে কি করতে হবে?

উত্তরঃ আপনি নিজেও রুকইয়াহ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে জরুরী হল আপনার ফ্যামিলির মেম্বাররা যেন আপনাকে সাহায্য করেন। আপনি এমনিতেই অসুস্থ, এর উপর রুকইয়াহ শুরু করার পর প্রথমদিকে আরও অসুস্থ হতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার উচিত হবে অন্যদের সাহায্য নেয়া। তারা যেন দৈনন্দিক কাজে আপনাকে সাহায্য করেন।

আপনি প্রথমেই সবধরনের তাবিজ নষ্ট করবেন এই লিংকের নিয়মে – জাদুর জিনিস বা তাবিজ নষ্ট করার নিয়ম

এরপর নিচের লিংক থেকে ১১ ও ২০ নং অডিও (শায়খ সুদাইস ও লুহাইদান) শুনবেন মন দিয়ে, কেউ যেন বিরক্ত না করে শোনার সময়। হেডফোনে বা লাউড স্পীকারে শুনতে পারবেন। কেউ যেন আপনার পাশে থাকে যখন শুনেন এবং লক্ষ রাখে আপনার অবস্থা – রুকইয়াহ অডিও ডাউনলোড

অডিও শুনে আপনার বিভিন্নরকম অবস্থা হতে পারেঃ

১। আপনি যদি জ্ঞান হারান অথবা নিজের ব্যক্তিত্ব পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই রাক্বির পরামর্শ নিবেন। এটাই ভাল হবে ইন শা আল্লাহ। না পারলে দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দেখুন।

২। যদি জ্ঞান না হারান কিন্তু খারাপ লাগে কম-বেশি, তাহলে নিচের পরামর্শ ফলো করবেন।

৩। কোন কিছুই বুঝতে পারেন নি অডিও শুনে, বরং স্বাভাবিক কুরআন তেলাওয়াতের মতই লেগেছে। তাহলে আপনি আরও ১-২ বার অডিওগুলো শুনবেন মন দিয়ে। যদি কিছু না বুঝতে পারেন তাহলে ধরে নিতে পারেন, আপনার সমস্যা পুরোটাই ট্র্যাডিশনাল চিকিৎসাশাস্ত্রের ব্যাপার। রুকইয়াহ করা জরুরি না।

পরবর্তি পরামর্শঃ

ক. আপনি বদনজরের রুকইয়াহ করবেন ১ সপ্তাহ। নিচের লিংকে বিস্তারিত- বদনজরের চিকিৎসা (রুকইয়াহ) : বদনজর ৪

খ. এরপর আপনি সিহরের রুকইয়াহ করবেন ১ মাস (বিস্তারিত-  সেলফ রুকইয়াহ গাইড (যাদু) )। এর মধ্যে ৩-৫ দিন বরই পাতার গোসল করবেন। (যেদিন বরই পাতার গোসল করবেন সেদিন আর সিহরের গোসল করতে হবে না।) – বরই পাতার গোসল এর নিয়ম

গ.। আক্রান্ত স্থানে (যে অংগ অবশ হয়ে গিয়েছে, যেখানে টিউমার/ক্যান্সার হয়েছে ইত্যাদি) কালোজিরার তেল/অলিভ ওয়েল মালিশ করবেন। তেলে নিচের লিংকের  “সাধারন রুকইয়ার আয়াত” আয়াতগুলো পড়ে ফু দিয়ে নিবেন। – প্রসিদ্ধ এবং প্রয়োজনীয় কিছু রুকইয়ার আয়াত
(পড়া সহিহ হওয়া জরুরী। আপনার পড়া সহিহ না হলে অন্য কাউকে দিয়ে পড়িয়ে নিবেন।)

এই পরামর্শ ফলো করলে ইন শা আল্লাহ আপনি উপকৃত হবেন। পরামর্শ থাকবে এরপর রুকইয়াহ সাপোর্ট বিডি গ্রুপে পোস্ট দিয়ে পরবর্তী পরামর্শ নেয়া। অথবা কোনো বিজ্ঞ রাক্বির সাথে যোগাযোগ করে পরবর্তী কর্তব্য জানতে চাওয়া।

প্রশ্ন-২: আমার অমুক আত্মীয় এই ধরনের সমস্যার আক্রান্ত। আমি কি তাকে রুকইয়াহ করতে পারবো?

উত্তরঃ জ্বি পারবেন। আপনি যদি সাহসী হন, আপনার যদি তেলাওয়াত সহিহ থাকে, আক্বীদায় ত্রুটি না থাকে তাহলে করেন ইন শা আল্লাহ। এক্ষেত্রে নিচের লিংক থেকে জিন-জাদুর সিরিজটা পড়ে নিবেন। তাহলে কিভাবে সরাসরি রুকইয়াহ কাউকে করতে হয় বা রাক্বিরা কিভাবে রুকইয়াহ করে সে ব্যাপারে সাধারন ধারণা পাবেন ইন শা আল্লাহ। –  www.ruqyahbd.org/all-posts

আর রোগীকে এর আগে যেসব স্টেপ বলা হয়েছে তার মধ্যে যেগুলো সম্ভব হয় ফলো করাবেন।

.

প্রশ্ন-৩: আমি অডিওগুলো শুনেছি কয়েকবার। আমি কিছু বুঝতে পারিনি, কোনো খারাপও লাগে নি। মনেহয় আমার সমস্যা মেডিক্যালিয়। আমার জন্য কোনো রুকইয়াহ আছে?

উত্তরঃ

১। আপনি উপরের (শুরুতে বলা) ১,৩,৪,৫ নং স্টেপ অনুসরণ করবেন ডাক্তারী চিকিৎসার পাশাপাশি।

২। এছাড়া আপনি প্রতিদিন সুরা আর-রাহমান তেলাওয়াত করবেন বা অডিও শুনবেন।

৩। নিচের লিংকের ২৩নং অডিও (শিফা – সাকিনাহ) শুনবেন। ruqyahbd.org/download

৪। নিচের লিংকের আয়াত ও দোয়াগুলো পড়ে পানিতে ফু দিয়ে খাবেন। মেডিসিন খাওয়ার সময় মেডিসিনে ফু দিয়ে খাবেন। – শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতার জন্য রুকইয়াহ

৫। সুরা ফাতিহা বেশি বেশি পড়ে নিজের গায়ে ফু দিবেন।

৬। উপরে যেভাবে মধু, কালোজিরা, তেল ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে সেভাবে ব্যবহার করবেন।

লক্ষনীয়, কেউ যদি নিজে নিজে এইগুলো করতে না পারে তাহলে অন্য কেউ তাকে করে দিলেও হবে। যেমন, কেউ সুরা ফাতিহা পড়তে পারে না। সেক্ষেত্রে অন্য কেউ সুরা ফাতিহা পড়ে তার গায়ে ফু দিতে পারবে।

.

প্রশ্ন-৪: আমার অমুক আত্মীয় আইসিইউতে আছে। জ্ঞান নেই। তার জন্য কোনো পরামর্শ আছে কি?

উত্তরঃ তার নিয়তে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করা। বিশেষ করে এই আয়াতগুলো –

১। সুরা ফাতিহা,
২। আয়াতুল কুরসি,
৩। সুরা আরাফের ১১৭-১২২,
৪। সুরা ইউনুসের ৮১-৮২ আয়াত,
৫। সুরা ত্বহার ৬৯ নং আয়াত,
৬। সুরা আত তাওবাহর আয়াত নং ১৪,
৭। সুরা ইউনুসের আয়াত নং ৫৭,
৮। সুরা নাহলের আয়াত নং ৬৯,
৯। সুরা বনী ইসরাঈলের আয়াত নং ৮২,
১০। সুরা আশ শুআরার আয়াত নং ৮০,
১১। সুরা হা-মীম সেজদাহ্‌র আয়াত নং ৪৪,
১২। সুরা মুমিনুনের ১১৫-১১৮ নং আয়াত,
১৩। সুরা হাশরের ২১-২৪ নং আয়াত,
১৪। সুরা ইয়াসিন,
১৫। সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস।

তার মেডিসিনে এইগুলো পড়ে ফু দিয়ে দিতে পারেন সম্ভব হলে। আর প্রচুর দান-সদকা করবেন।

লক্ষনীয়, কতক্ষন পড়তে হবে এর কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। আপনি ২৪ ঘন্টা পড়তে পারলেও কোনো অসুবিধা নেই। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত পড়বেন। নিজের স্বজনদের জন্য নিজে পড়াই ভাল। কারণ, মসজিদের হুজুর ততটা আন্তরিকতার সাথে নাও করতে পারে যতটা আপনি করবেন।

(তাড়াহুড়ো করে লিখা। তবুও ইন শা আল্লাহ বুঝতে কষ্ট হবে না। কেউ ফলো করলে অবশ্যই ফিডব্যাক জানাবেন। এতে কিছুটা সংশোধন, সংযোজন-বিয়োজনের দরকার থাকলে করা হবে ইন শা আল্লাহ।)

লিখেছেন – আহমেদ রবিন

মন্তব্য করুন