সেদিন একজন ফোন করলেন। বলতে গেলে পুরনো পেশেন্ট। দেড় বছর ধরে আমার থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। তার পুরো পরিবারই মোটামুটি সমস্যাগ্রস্থ। ধারনা করি, সিহর ও আসরের সমস্যা। (আল্লাহই ভাল জানেন) এর মধ্যে সেন্টারেও পাঠিয়েছি। সেখানে জিনের সাথে বাতচিত হয়েছে। কিন্তু যায় নি। একদিন ফোনে কথা বলতে বলতেই জিন উঠে গিয়েছে এবং আমাকে ধমক দিচ্ছে। (এতে বোঝা গেল জিন ফোনে কথা বলতে পারে, সোশ্যাল মিডিয়াও ব্যবহার করতে পারে তবে মানুষের সাহায্যে। মানুষের উপর ভর না করে স্বতন্ত্রভাবে ফোন চালায়, ফেবু চালায় এমন বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাইনি এখনো, রুকইয়াহ ফিল্ডে যাদের ফলো করি তাদের থেকেও শুনিনি)
যাই হোক, এতদিন সেলফ রুকইয়াহ করে উনার ৮০% সমস্যা লাঘব হয়েছে বললেন। এখনো রুকইয়াহ করছেন, জিন এখনো শরীরে আছে বলেই মনে করেন। আবার রাকির কাছে একটানা রুকইয়াহ করানোর মত অবস্থাতেও নেই।
তার জন্য আমার পরামর্শ ছিল রুকইয়াহ ও আমলের পাশাপাশি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে থাকা। পড়াশুনা করা, ঘরের কাজ কর্ম করা, সংসারের ফিকির করা, বাচ্চা-কাচ্চা পড়ানো ইত্যাদি। টাকা পয়সা জমানো যেন ভবিষয়তে আবার সরাসরি রুকইয়াহ করতে পারেন দীর্ঘ সময় নিয়ে।
জিন/জাদুগ্রস্থরা সাধারণত আমলতো করতে পারেনই না উপরন্তু স্বাভাবিক জীবন যাপন করতেও অনেক সময় অপারগ হয়ে যান। পড়া-শুনা করতে পারেন না, রান্না-বান্না, লেখা-লেখি, ঘরের কাজ কিছুই করতে পারেন না; পারলেও খুবই কষ্ট হয়। পরজীবীগুলা (জিন) আক্রান্ত ব্যক্তিকে অথর্ব জড় পদার্থে পরিনত করতে চাইবে। তাহলে তাদের স্বার্থসিদ্ধি সহজ হয়।
তাদের এই উদ্দেশ্য সফল হতে দেয়া যাবে না। যথাসম্ভব স্বাভাবিক মানুষের মত জীবন যাপন করতে চেষ্টা করতে হবে। আমরা যারা পরামর্শ দেই তাদেরও এই দিকটা লক্ষ রেখে পরামর্শ দেয়া উচিত।
কাজেই যারা দীর্ঘদিন ধরে রুকইয়াহ করছেন কিন্তু সুস্থ হচ্ছেন না, তারা এমনটা কখনোই ভাববেন না যে আপনারা ব্যর্থ হচ্ছেন বরং আপনারা ব্যর্থ তখনই হবেন যখন হতাশ হয়ে রুকইয়াহ করা ছেড়ে দিবেন/আমলে দুর্বল হয়ে যাবেন। আপনি লক্ষ করলে দেখবেন রুকইয়াহ শুরু করার আগে আপনার যদি ১০০ টা সমস্যা থেকে থাকে রুকইয়াহ করার পর হয়ত ৯০ টা চলে যাবে আর ১০ টার মধ্যে ৬ টা হয়ত সরাসরি রুকইয়াহ করার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা হাল করে দিবেন আর বাকি ৪ টা হয়ত থেকেই যাবে। দুনিয়াতে যদি সব সমস্যার সমাধানই হবে তাহলে আখিরাতে প্রতিদান কিভাবে পাবেন?
মন্তব্য করুন