Ruqyah Support BD

পূজার সময় আমাদের জন্য সতর্কতা

এখন (লেখাটি প্রকাশের সময়) পূজা চলছে। পূজার মধ্যে যেহেতু পুরোহিতরা মন্ত্রপাঠ, শয়তান পূজা সবই করে, এমনকি পৌত্তলিকদের কিছু দেবদেবী আক্ষরিক অর্থেই জিন-শয়তান। অনেক সময় মুর্তির মাঝে শয়তান ঢুকে বিভিন্ন ভেলকি দেখায়, কথা বলে, কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটে। ফলে মানুষ আরও বিভ্রান্ত হয়। কিছু ক্ষেত্রে শয়তানদের নামে পশুবলি দেয়া হয়। সবমিলিয়ে পূজার সময় শয়তানদের আনাগোনা বেড়ে যায়।

গত কয়েক বছরে আমরা এমন অনেক ঘটনা জেনেছি, যেগুলোতে মন্দির বা মণ্ডপের কাছে দিয়ে যাওয়ার সময়; কিংবা পূজার খাবার খাওয়ার পর খারাপ জিন দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। কিংবা সমস্যা আগে থেকেই ছিল, পূজার সময়ে অনেক বেড়ে গেছে। নাম শুনলে মুসলিম মনে হয় এমন অনেক কবিরাজও এসময় শয়তানের বিশেষ উপাসনা করে। তাই আপনার এলাকায় পূজার মণ্ডপ থাকলে এই কয়দিন অতিরিক্ত সতর্ক থাকা উচিত।


সংক্ষেপে করণীয়ঃ

১. প্রতিদিন হিফাজতের মাসনুন যিকর করা। অন্তত বেসিক যিকিরগুলো বাড়ির সবাই অবশ্যই করা, যেমন- সকাল-সন্ধ্যার প্রাথমিক আমল, ঘুমের সময়, খাবার, বাড়িতে ঢোকার-বের হওয়ার, টয়লেটে যাওয়ার আমল ইত্যাদি। ছোট বাচ্চারা যদি করতে না পারে, নিজেরা যিকর করার পর তাদেরকে ফুঁ দিয়ে দিবেন। (লিংক- মাসনুন আমল: যাদু, জ্বিন এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে বাচার উপায়)

২.  বিসমিল্লাহ বলে দরজা-জানালা বন্ধ করবেন। ঘরে ঢুকতে বের হতে দোয়া পড়বেন। (ঢুকতে বিসমিল্লাহ বলা, বের হতে বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু ‘আলাল্লাহ… দোয়া শেষ পর্যন্ত পড়া উচিত)

৩. পারতপক্ষে ছাদের দরজা এবং মণ্ডপের দিকের দরজা-জানালা খোলা রাখবেন না। বিশেষ করে পূজার সময় বিষয়টা লক্ষ রাখবেন।

৪. সন্ধ্যার দিকে বাচ্চাদের বাইরে বের হতে দেবেন না।

৫. দোয়া ইস্তেগফার চালু রাখবেন সবসময়। (ইস্তেগফারের জন্য অন্তত নিজেরা গজব থেকে বেঁচে যাবেন)। যখন উলুধ্বনি বা ঘণ্টা বেশি বাজায়, সেই সময়ে বাড়ির মধ্যে কোরআন তিলাওয়াত বা রুকইয়াহ শুনতে পারেন।

৬. কেউ যদি এমন এলাকায় থাকেন, যেখানে পূজা অনুষ্ঠিত হয়- তাহলে পূজার স্থান এড়িয়ে চলবেন। একান্ত ওই রাস্তা ব্যবহার করতেই হলে মনে মনে “আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রজীম…” পড়ে আল্লাহর সাহায্য চাইতে চাইতে অতিক্রম করা উচিত।

৭. পূজার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা, পূজার খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। এসব মুসলিমদের জন্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। হারাম।

৮. কারও আত্মীয়-স্বজনের মাঝে কবিরাজ-খোনারের কাছে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে তারা বেশি সাবধান থাকবেন। মাসনুন আমল অ্যাপ দেখে বেশি করে যিকর করবেন। জাদু.. এবং জিন.. থেকে বাঁচতে করণীয় বিষয় নিয়ে দুইটা লেখা আছে, সেগুলো খেয়াল রাখতে পারেন।

৯. কেউ আক্রান্ত হলে বা কারও অস্বাভাবিক কোনো সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে অবিলম্বে রুকিয়াহ শুরু করে দিন।
সাপোর্ট গ্রুপে পোস্ট করে অপেক্ষায় না থেকে প্রাথমিক পরামর্শ ফলো করা শুরু করে দিবেন। সমস্যা বেশি মনে হলে ‘৭দিনের ডিটক্স রুকইয়াহ‘ করে ফেলবেন। এক-দুই সপ্তাহ এসব ফলো করে এরপর গ্রুপে আপডেট পোস্ট দিলে তাড়াতাড়ি এপ্রুভ হবার সম্ভাবনা থাকবে ইনশাআল্লাহ।

১০. বোনাস টিপস:
এই দোয়াটি সকাল-বিকাল ১০০বার করে পড়ার চেষ্টা করুন। প্রতিদিনের নিরাপত্তার জন্য তো বটেই, কারও সমস্যা থাকলে (বিশেষত মুশ্রিক জিন বা জাদুকরের ক্ষেত্রে) রুকইয়ার নিয়ত করলে সেজন্যও এটি উপকারী হবে ইনশাআল্লাহ।

لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ ، وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ، لَهُ الْمُلْكُ ، وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হ্ামদ, ওয়াহুওয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর’


এই পোস্টের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় লিংক সমূহ যুক্ত করে দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন