ছোট বাচ্চাদের ওপর রুকইয়াহ করা বেশ সহজ। উপরন্তু তাদের গুনাহ থাকে না বিধায় রুকইয়াহ করলে অল্পতেই অনেক বেশি উপকার হয়।
প্রথমত: বাচ্চাদের সাথে কোন তাবিজ-কবচ, নজর লাগার টিপ থাকলে নষ্ট করার ব্যবস্থা করুন। কোন সমস্যা না থাকলেও এসব জিনিসের কারণে সমস্যা তৈরি হয়।
দ্বিতীয়ত: ঘরে কোন প্রাণীর ছবি, পুতুল, বাদ্যযন্ত্র বা এমন কিছু যেন না থাকে, যা রহমতের ফেরেশতা প্রবেশে প্রতিবন্ধক।
তৃতীয়ত: বাচ্চাদের সরাসরি জিন বা জাদুর সমস্যা খুব কম হয়, তাই একটু অস্বাভাবিক আচরণ দেখলেই ঘাবড়ানোর কিছু নেই। হ্যা! বদনজর লাগতে পারে, এজন্য বদনজরের রুকইয়াহ করতে পারেন।
আরেকটি বিষয় হলো, যেহেতু সমস্যা অনেক কারণেই হয়, তাই নির্দিষ্টভাবে বদনজরের নিয়াত না করে, যে সমস্যা হচ্ছে সেই নিয়াতে রুকইয়াহ করাই ভালো। তবে নিশ্চিতভাবে বোঝা গেলে ভিন্ন কথা।
বাচ্চাদের রুকইয়ার নিয়ম খুবই সহজ— কাছে ডেকে স্বাভাবিকভাবে বসান, অথবা কোলে নিন। আপনার সম্পূর্ণ মনযোগ বাচ্চার প্রতি নিবদ্ধ করুন। এরপর মাথায় হাত রেখে কয়েকবার রুকইয়ার দোয়া বা আয়াতগুলো পড়ুন। পড়ার মাঝেমাঝে ফুঁ দিন। এতটুকুই!
হাদীসে বর্ণিত এই দোয়াটি পড়তে পারেন:
أُعِيْذُكُمْ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
উচ্চারণ: উ‘ইযুকুম বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মাহ, মিন কুল্লি শাইত-নিন ওয়াহা-ম্মাহ, ওয়ামিন কুল্লি ‘আইনিন লা-ম্মাহ।
সাথে সূরা ফাতিহা এবং তিন কুল পড়া যায়। এছাড়া এই কিতাবের বিভিন্ন যায়গায় (অথবা ওয়েবসাইটের পিডিএফগুলোতে) লেখা দুআ বা আয়াতগুলো থেকেও পড়তে পারেন।
প্রয়োজনে পরপর কয়েকদিন সকাল বিকাল রুকইয়াহ করুন। পানি বা খাবারে ফুঁ দিয়ে খাইয়ে এবং গোসল করিয়ে দিন।
তবে সমস্যা যদি জটিল হয়, অর্থাৎ জাদু অথবা জিনের আসরের লক্ষণগুলো প্রকট আকারে দেখা যায়। তাহলে বড়দের মত একটু দীর্ঘ সময় রুকইয়াহ করা এবং সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে।
এক্ষেত্রে বাচ্চার বয়স, শারিরীক এবং মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে পরিমাণে কম-বেশি করতে হবে। প্রয়োজনে ৭ দিনের ডিটক্স রুকইয়াও করানো যাবে।
খেয়াল রাখার বিষয় হলো,
১. রুকইয়ার সময় বাচ্চাদের কখনো মারধর করবেন না।
২. একই যায়গায় বা একইভাবে বসে থাকতে বাধ্য করবেন না। এমন কোন কাজ করবেন না, যাতে সে ঘাবড়ে যাবে।
৩. জিন বা শয়তানের ব্যাপারে ভয় না দেখিয়ে সাহস দিন। গল্পে গল্পে আল্লাহর কালামের শ্রেষ্ঠত্ব এবং শয়তানদের দূর্বলতা বোঝান।
৪. একদম শুরু থেকেই ছোট ছোট জিকির-আজকারগুলো মুখস্ত করান এবং সেগুলো পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৫. সকাল-সন্ধ্যার আমলগুলো সে নিজে না করতে পারলে অন্য কেউ পড়ে ফুঁ দিয়ে দিন।
৬. পরিবারের সবাই পাক-সাফ থাকার প্রতি গুরুত্ব দিন।
৭. আর ছোট থেকেই মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
—–
এই বিষয়ে কয়েকজনের লেখা আছে, আমার আলাদা পোস্ট দেয়ার দরকার ছিল না। কিন্তু “রুকইয়াহ” এর ২য় সংস্করণে এটা যুক্ত হচ্ছে, তাই অনলাইনেও পাবলিশ করে দিলাম..
আসসালামু আলাইকুম , আমার বড় মেয়ে, বয়স ১০।ক্লাস 5 পড়ে।পাশাপাশি হিফজুল কোরান করছে ।কিন্তু সমস্যা হলো:অদবের খুব সমস্যা,অস্থির, কথা শুনলেও কিন্তু অনেক তর্ক করে।আবার খুব ইমোশনাল,, বকা দিলে কিংবা বুঝালে কান্না করে।বুঝানোর পর মেনেও নেয় ,, কিন্তু কিছু ক্ষন পর বা সর্বোচ্চ ১ দিন নিজেকে ঠিক রাখার চেষ্টা করে।কিন্তু আর পারে না। প্রায় 3বছর ধরে এমনই চলছে।পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরে ।সাথে নামাজের পর দুআ এবং ৩ কুল পড়ে। এ সমস্যা জন্য রুকইয়াহ আছে কি??
পোস্টে যা বলা হয়েছে এক সপ্তাহ প্রতিদিন করুন। এরপর গ্রুপে আপডেট জানান।
আসলে এই দোয়াটি আমার সন্তানের জন্য পরতে চাই।অন্য এক জায়গায় দেখছি এরকম-“উ‘ইযুকুম বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিওঁয়া হা-ম্মাহ্, ওয়ামিন কুল্লি আইনিল্লা-ম্মাহ্।”আরবি দেখে দেখে মোটামুটি পরতে পারে।কিন্তু অতটা পারদর্শী না।যদি একটু কষ্ট করে বলতেন,শেষের দিকে আইনিন লা-ম্মাহ নাকি আইনিল লা-ম্মাহ পরব?হিসনুল মুসলিম এপস থেকে দোয়াটি দেখেছি।
আইনিল – পড়া ভালো