Ruqyah Support BD

নিদ্রাহীনতা এবং ঘুম সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যায় করণীয়

[ক]
প্রতিদিন ঘুমের সময় কিছু কাজ সবারই করা উচিত। কোন সমস্যা থাকুক অথবা না থাকুক, সবারই…
১. ওযু করে বিছানায় যাওয়া।
২. শোয়ার পূর্বে বিছানা ৩বার ঝেড়ে নেয়া।
৩. ডান কাত হয়ে শোয়া, পরে অন্য দিকে ঘোরা যাবে। গালের নিচে হাত রাখা।
৪. আয়াতুল কুরসি এবং বাকারার শেষ ২ আয়াত পড়া
৫. সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস পড়া এবং হাতে ফুঁ দিয়ে শরীর মুছে নেয়া। এভাবে ৩বার করা।
৬. ঘুমের দোয়া পড়া, বিশেষতঃ বিসমিকা – আল্লাহুম্মা… এবং বিসমিকা রব্বী… দোয়া দুইটি
৭. সুবহানাল্লাহ ৩৩বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩বার, আল্লাহু আকবার ৩৪বার পড়া।
৮. সম্ভব হলে এসময়ের অন্যান্য আরও মাসনুন যিকর করা।
৯. প্রতি রাতে সুরা মূলক তিলাওয়াত এর চেষ্টা করা।
(ঘুমের আগের যিকরগুলো একত্রে পাওয়া যাবে হিসনুল মুসলিম বই এবং আমাদের “মাসনুন আমল” অ্যাপে। লিংক কমেন্টে দেয়া হল।)

 

[খ]
নিদ্রাহীনতা বা ইনসোমনিয়ার সমস্যা –

যাদের নিদ্রাহীনতার সমস্যা আছে, রাতে ঠিকমত ঘুম আসে না, এপাশ ওপাশ করে রাত কেটে যায়, তাদের জন্য কিছু টিপস এবং রুকইয়াহ –

১. ওপরের কাজ এবং যিকরগুলো করুন।
২. সুরা কাহফ; আয়াত ১১, ত্বহা; আয়াত ১০৮, নাবা; আয়াত ৯ – সবগুলো তিনবার/সাতবার পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে মাথা থেকে পুরো শরীর (স্বাভাবিকভাবে যতদূর হাত যায়) মাসাহ করুন, পানিতে ফুঁক দিয়ে পান করুন। এভাবে লাগাতার সপ্তাহখানেক করুন। ইনশাআল্লাহ সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে।
৩. চাই প্রতি রাতে যায়দ বিন সাবিত রা. এর দোয়াটা পড়তে পারেন। (আল্লাহুম্মা গারাতিন নুজুম…)

اَللَّهُمَّ غَارَتِ النُّجُوْمُ ، وَهَدَأتِ الْعُيُوْنُ ، وأَنْتَ حَيٌّ قَيُّوْمٌ ، لَا تَأْخُذُكَ سِنَةٌ وَّلَا نَوْمٌ، يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ ! أَنِمْ عَيْنِيْ ، وَأَهْدِئْ لَيْلِيْ

 

অথবা এটাও পড়া যায়ghum asar dua নিদ্রাহীনতা এবং ঘুম সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যায় করণীয়

৪. এরপরেও সমস্যা থাকলে ঘুমের আগে সুরা বাকারা অথবা ৮সুরার রুকইয়াহ শুনুন। প্রতিদিন রুকইয়ার গোসল করুন।
.
[গ]
অতিরিক্ত ঘুম নিয়ে সমস্যার ক্ষেত্রে

সারাদিন ঘুমঘুম লাগা নজরের সমস্যার জন্য হতে পারে, আগে সেজন্য কয়েকদিন রুকইয়াহ করা উচিত। 
আর এই দোয়াটা সাহাবা ও তাবীঈদের কেউ কেউ পড়তেন, চাইলে প্রতিদিন দোয়া করার সময় এটা পড়তে পারেন –

اَللَّهُمَّ اشْفِنِيْ مِنَ النَّوْمِ بِالْيَسِيْرٍ ، وَارْزُقْنِيْ سَهَرًا فِي طَاعَتِكَ

ভাবার্থ- হে আল্লাহ, অল্প ঘুমের দ্বারাই আমার সুস্থ (তৃপ্ত) করো, আর তোমার ইবাদাত করে রাত্রি জাগরণের তাওফিক দাও।  
(সিয়ারু আলামিন নুবালা এবং হিলয়াতুল আউলিয়ায় একাধিক বর্ণনা আছে এটার ব্যাপারে)
.
[ঘ]
খারাপ স্বপ্ন দেখলে
হাদিসে এসেছে – সৎ ও ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে হয়ে থাকে। আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের তরফ হতে হয়ে থাকে। তাই যখন কেউ পছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখে তখন এমন লোকের কাছেই বলবে, যাকে সে পছন্দ করে।
আর, খারাপ বা অপছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখলে যা যা করা উচিৎঃ 
১. তার বাম দিকে ৩ বার হাল্কা থুতু ফেলবে।
২. শয়তান থেকে এবং যা দেখেছে তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবে প্রার্থনা করবে। (৩ বার)
৩. কাউকে এ ব্যাপারে কিছু বলবে না।
৪. অতঃপর যে পার্শ্বে সে ঘুমিয়েছিল তা পরিবর্তন করবে।
৫. যদি ইচ্ছা করে তবে উঠে সালাত আদায় করতে পারে। 
.
[ঙ]
ঘুমের মধ্যে জিন-শয়তানের সমস্যা 

ঘুমন্ত অবস্থায় ভয় পেলে অস্বস্তি লাগলে এই দোয়া মনোযোগ দিয়ে বারবার পড়া উচিত, যাদের ঘনঘন সমস্যা হয় তারা চাইলে ঘুমের আগেও পড়তে পারে – 

أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ، وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ وَأَنْ يَحْضُرُوْنِ

 ভাবার্থ  আমি আশ্রয় চাই আল্লাহ্‌র পরিপূর্ণ কালামসমূহের অসীলায় তাঁর ক্রোধ থেকে, তাঁর শাস্তি থেকে, তাঁর বান্দাদের অনিষ্ট থেকে, শয়তানদের কুমন্ত্রণা থেকে এবং তাদের উপস্থিতি থেকে।

ঘুমের সময় জ্বিন সেক্সুয়াল হ্যারাশমেন্ট করলে বা শারীরিক নির্যাতন করলে “রাত্রিতে জ্বিনের সমস্যা” লেখাটা ফলো করুন। বিকল্প লিংকঃ ফেসবুক থেকেও পড়া যাবে

এক্ষেত্রে সমস্যা বেশি হলে, স্থায়ী আরোগ্যের জন্য গুরুত্বের সাথে সময় নিয়ে রুকইয়াহ করে যেতে হবে।

আল্লাহ আমাদের পেরেশানি দূর করে দিক, প্রশান্তির ঘুম এনে দিক।। আমিন।

—-
কৃতজ্ঞতাঃ [খ] অংশ শাইখ হাসান বিন ইলিয়াসের মেসেজ অবলম্বনে। [গ] অংশ মাসিক আলকাউসার থেকে।
 
  • এবিষয়ে আলোচনার রেকর্ড শুনতে দেখুন: https://youtu.be/7r3pivdavzY (ঘুম, স্বপ্ন, দুঃস্বপ্ন এবং বিবিধ সমস্যা ও প্রতিকার নিয়ে আলোচনা)

মন্তব্য করুন