Ruqyah Support BD

সেলফ রুকইয়াহ গাইড (বদনজর)

লিখেছেনঃ Ahmmad Robin

বদনজর ও বদনজরের চিকিৎসা

[ক]
যারা নিজেদের বদনজরে আক্রান্ত ভাবছেন বা যারা যাচাই করতে চান যে তিনি আসলেই বদনজরে আক্রান্ত কিনা তাদের জন্য এই পোস্ট উপকারী হবে ইন শা আল্লাহ। প্রথমেই নিচের লক্ষনগুলো থেকে মিলিয়ে দেখেন কতগুলো লক্ষন আপনার সাথে মিলেঃ

১। শরীরে জ্বর থাকা, কিন্তু থার্মোমিটারে না উঠা।
২। কোনো কারণ ছাড়াই কান্না আসা..
৩। প্রায়সময় কাজে মন না বসা, নামায যিকর ক্লাসে মন না বসা।
৪। প্রায়শই শরীর দুর্বল থাকা, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব লাগা।
৫। চেহারা ধুসর/হলুদ হয়ে যাওয়া।
৬। বুক ধড়পড় করা, দমবন্ধ অস্বস্তি লাগা।
৭। অহেতুক মেজাজ বিগড়ে থাকা।
৮। আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুদের সাথে দেখা হলেই ভালো না লাগা।
৯। অতিরিক্ত চুল পড়া। শ্যাম্পুতে কাজ না করা।
১০। পেটে প্রচুর গ্যাস হওয়া।
১১। বিভিন্ন সব অসুখ লেগে থাকা যা দীর্ঘদিন চিকিৎসাতেও ভালো হয় না। (সর্দিকাশি, মাথাব্যথা ইত্যাদি)
১২। হাত-পায়ে মাঝেমধ্যেই ব্যাথা করা, পুরো শরীরে ব্যাথা দৌড়ে বেড়ানো।
১৩। ব্যবসায় ঝামেলা লেগে থাকা।
১৪। আপনি যে কাজে অভিজ্ঞ সেটা করতে গেলেই অসুস্থ হয়ে যাওয়া।

প্রথমত, এসব লক্ষণ যদি দুই একটা মিলে তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনার রুকইয়াহ করা লাগবে না। পাচ ওয়াক্ত নামায, প্রতিদিনের মাসনুন আমল এবং বেশি বেশি দোয়া করাই যথেষ্ট হবে।

মাসনুন আমল সম্পর্কে এখানে দেখুন

দ্বিতীয়ত, যদি ৪-৫ টা লক্ষন মিলে যায় তাহলে কমপক্ষে ১ সপ্তাহ বদনজরের রুকইয়াহ করা উচিত। এতে সুস্থ হলে আরও কয়েকদিন করা উচিত।

তৃতীয়ত, যদি আরও বেশি লক্ষন মিলে যায় তাহলে ২ থেকে ৩ সপ্তাহ নজরের রুকইয়াহ করলে ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে উঠবেন।

বদনজরের রুকইয়াহ করার নিয়ম এই লিংকে দেখুন- বদনজরের চিকিৎসা (রুকইয়াহ)

[খ]
নজরের লক্ষনগুলো সাথে সাথে যদি আপনার জ্বিন সংক্রান্ত সমস্যা থাকে তাহলে এডমিনদের পরামর্শ নিবেন।  জ্বিন সংক্রান্ত সমস্যার লক্ষন এখানে পাবেন।

এখান থেকে যদি ২-১ টা মিলে তাহলে ইনশাআল্লাহ নজরের রুকইয়াহ করতে কোন অসুবিধা নেই। আর যদি বেশি মিলে তাহলে গ্রুপ এডমিনদের পরামর্শ অবশ্যই নিবেন।

[গ]
কারও কারও নজরের সমস্যা সাথে সাথে ওয়াসওয়াসার সমস্যা থাকে। ওয়াসওয়াসার সমস্যা সম্বন্ধে জানতে এখানে দেখুন।

এখান থেকে যদি কিছু মিলে যায় তাহলে নজরের রুকইয়াহর পাশাপাশি ওয়াসওয়াসার জন্য রুকইয়াহ করবেন। ওয়াসওয়াসার রুকইয়াহ এখানে পাবেন।

[ঘ]
যাদের রাতে ঘুমের সমস্যা হয়, ঘুমুতে ভয় পান, কোন ছায়া দেখেন, মনে হয় কেউ আছে তারা নজরের রুকইয়াহ করার পাশাপাশি আটসুরার রুকইয়াহ শুনবেন। ডাউনলোড পেইজে থেকে পাবেন আটসুরার রুকইয়াহ (৮ নং অডিও – আট সুরার রুকইয়াহ)

[ঙ]
উপরের কথাগুলো প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য। যদি নাবালেগ কারও, ছোট বাচ্চা, দুধের বাচ্চার নজর লাগে তাহলে কিভাবে বুঝবেন? যদি ব্যবসা বা ঘরবাড়িতে, গবাদি পশু, ফসলে নজর লাগে তাহলে?

বাচ্চারা খেতে না চাওয়া, পেটে সমস্যা হওয়া, অসুখ বিসুখ লেগেই থাকা, বদমেজাজি হয়ে যাওয়া, শরীর-স্বাস্থ্য না হওয়া, পড়াশুনায় ভাল ছিল হুট করে খারাপ হয়ে গিয়েছে, কথাবার্তায় চটপটে ছিল কিন্তু এখন কথা আটকে যাচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি হলে নজরের রুকইয়াহ করে ইন শা আল্লাহ উপকার পাবেন। নিচের পদ্ধতিগুলো যেটা আপনার বাচ্চার জন্য প্রযোজ্য হবে সেটাই ফলো করবেন। তবে আমার রিকমেন্ডেশন হবে প্রথমে ঘরের সবার ওযুর পানি একটি পাত্রে নিয়ে বাচ্চার গায়ে ঢেলে দিন। এরপরও যদি সমস্যা থাকে তাহলে অন্য পদ্ধতিগুলো ফলো করবেন। তিনদিন করার পর অবশ্যই একবার আপডেট দিবেন।

দেখুন – বাচ্চাদের নানান সমস্যার জন্য কিভাবে রুকইয়াহ করবেন?

ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গবাদি পশুর ব্যাপারেও এখানে আলোচনা করা হয়েছে।

[চ]
নোটঃ
১। মেয়েদের পিরিয়ড শুরু হলেও রুকইয়াহ করতে পারবে। গোসলের পানি অন্য কেউ পড়ে দিবে।

২। একজন পানি তৈরি করে দিলে অন্য জন গোসল করতে পারবে।

৩। নজরের রুকইয়াহ করলে প্রথমদিকে শরীর খারাপ করতে পারে। তখন বন্ধ করা যাবে না। ধৈর্য্য ধরে রুকইয়াহ চালিয়ে যেতে হবে। ইন শা আল্লাহ সাফল্য আসবে।

৪। গায়ে/ঘরে কোন তাবিজ থাকলে অবশ্যই নষ্ট করে ফেলতে হবে আগে। কোন মূর্তি, পুতুল, ছবি ইত্যাদি থাকলে সরিয়ে ফেলতে হবে। ঘরে কুকুর থাকা চলবে না।

তাবিজ নষ্টের নিয়ম এখানে পাবেন। 

পুরো লেখাটা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। একবার না বুঝলে কয়েকবার পড়ুন। আল্লাহ চায়তো এরপর নিজেই নজরের রুকইয়াহ করতে পারবেন। কাউকে জিজ্ঞেস করতে হবে না, বরং অন্যদেরও পরামর্শ দিতে পারবেন।
তবে আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

আল্লাহ আপনাকে এমন আরোগ্য দান করুন যাতে আর কোন রোগ বাকি না থাকে। আমীন।

মন্তব্য করুন