লিখেছেনঃ উম্মে আব্দুল্লাহ
গত পরশুদিন এশার সালাতের প্রস্তুতি নিচ্ছি এমন সময় পাশের বাড়ির পিচ্চির কান্নার শব্দ কানে আসলো। কান্নাটা স্বাভাবিক মনে হলোনা। ছোট বোন এসে বললো, পিচ্চির দাদি নাকি ডাকছে আমাকে। ওখানে যাওয়ার পর দেখি পিচ্চি সেই কান্নাকাটি করছে। আমি ওকে প্রায় প্রতিদিনই দেখি। কিন্তু আজকে ওকে বেশ আলাদা লাগছিলো অন্যদিনের থেকে।
প্রথমে ভাবছিলাম এমনিই তিন কুল পড়ে শরীর মুছে দিবো। কিন্তু ওকে দেখার পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলাম। সেই কানে আউজুবিল্লাহ পড়া শুরু করছি ওর কান্নার জোর আরো বেড়ে গেলো। আর আমাকে ধাক্কা দেয়া শুরু করলো। ওর কাছে কোনরকমেই ভিড়তে পারছিলাম না। আর অন্যরাও যেতে দিচ্ছিলো না পেটে লাগার ভয়ে। আর আমাকে দেখলেই ওর কান্নার জোর বাড়ছে। তাই ফোনে রুকিয়া ছেড়ে দিলাম তাও শুনলোনা। উপায় না দেখে তিন কুল পড়ে শরীর মুছে দিলাম। তখন একটু শান্ত হলো। কিন্তু তাতে কি আমি কাছে যেতে পারছিলাম না। আমার দিক চোখ পড়লেই চিল্লাচিল্লি শুরু করছে আর কাছে গেলেই হাত পা ছুড়াছুঁড়ি করছে। [অথচ ও প্রায় প্রতিদিনই আমাদের বাড়িতে আসে আর আমি ওর সাথে খেলি]
যাই হোক আমি তখন বসে বসে আয়াতুল কুরসি আর দু’আ করছিলাম তাঁর কাছে। কারন তিনি ছাড়া উদ্ধারের কেউ নাই। দেখলাম আস্তে আস্তে ও স্বাভাবিক হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ। এরপর একসময় শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লো আলহামদুলিল্লাহ। এরপর ওর মা বললো কি পড়লাম আমি। আমি বললাম তিন কুল আর আয়াতুল কুরসি।
উনি বললেন, “আমিও তো পড়ে পড়ে ফুঁ দিচ্ছিলাম। কিন্তু কিছু হলোনা যে!!”
আমি-“ইয়াক্বীনের সাথে পড়ছিলেন?”
উত্তরটা মুখে আসলো না চেহারায় প্রকাশ পেলো।
বললাম, ইয়াক্বীনের সাথে পড়লে ফায়দা হবেই ইনশাআল্লাহ! রব্বুল আ’লামীন তাঁর বান্দার আশা, ইয়াক্বীনকে ভঙ্গ হতে দেন না আলহামদুলিল্লাহ।
এটা ছিলো একটা দু’আ ও ইয়াক্বীনের গল্প। কিন্তু প্রায় প্রতিদিনই একটা অভিযোগ শুনি এত অত রুকিয়া করি তবুও কাজ হচ্ছেনা। এত দু’আ করি তাও কবুল হচ্ছেনা।
এমন যদি হয় তাহলে নিজেকে একবার প্রশ্ন করে দেখুন, “আপনার ঈমান ও ইয়াক্বীন ঠিক আছে তো?”
মন্তব্য করুন