Ruqyah Support BD

চরিত্র ঠিক করার রুকইয়াহ আছে?

চরিত্র নষ্ট হলে কোনও রুকইয়াহ আছে?

১। এই কথার প্রথম জবাব হল, নেই। কিন্তু এটাই কি একমাত্র জবাব? না। আমার কাছে এটাই একমাত্র জবাব নয়। কারণ দেখতে হবে চরিত্র নষ্ট কেন হল। সঙ্গদোষে লোহা ভাসে বলে একটা কথা আছে। সঙ্গ ছেড়ে দিলে আবার ভাসে না। চরিত্রই নষ্ট নাকি শয়তানের কারণে নষ্ট হয়েছে ভাবা দরকার।
২। বদনজর, জ্বিন, জাদুতে আক্রান্ত হলে লোকজনের মধ্যে ইবাদতে অনীহা দেখা দেয়। বিপরীতভাবে বলা যায়, ইবাদতে হুট করে অনাগ্রহ দেখা দেয়া হল বদনজর, জিন, জাদুতে তথা রুকইয়াহ সংক্রান্ত সমস্যায় আক্রান্ত হবার লক্ষন। ভাল বিষয়, হালাল বিষয় ভাল লাগবে না। ভাল লাগলে শয়তানি বিষয়, হারাম বিষয়।
৩। চুম্বক যেমন প্রভাবিত করে লোহাকে, তেমনি খারাপ মানুষ প্রভাবিত করে মানুষকে। এই কারণে হাদিসে ভাল লোকের সাথে চলতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে কামারের চুল্লির কাছে গেলে আগুনের ছিটা না লাগলেও ধোঁয়া নাকে লাগবে। ফ্যামিলিতে যদি এমন প্রভাবিত ব্যক্তি থাকে তাহলে তার সাথে না চলা কঠিন। কথার কথা, পরিবারের একজন বদনজর/জিন/জাদুতে আক্রান্ত হলে তার প্রভাবে অন্যদের উপর পড়তে পারে। (পরহেজগার ব্যক্তি হলে ভিন্ন বিষয়। এই ব্যপারে সম্ভবত অন্য কোথাও বিস্তারিত লিখেছিলাম।)
৪। কারও সাথে কারও সম্পর্ক নষ্ট করতে চাইলে এক ব্যক্তি যেসব কাজ অপছন্দ করে, অপর ব্যক্তি সেসব কাজে লিপ্ত হয়। এতে দু’জনের মাঝে সম্পর্কের অবনতি ঘটে, ফলশ্রুতিতে বিচ্ছেদ ঘটতে পারে।
৫। এই অপছন্দের কাজ যখন হারামে গড়ায় তখনই তাকে চরিত্র নষ্ট বলা হয়।
উপরের পয়েন্টগুলো একসাথে চিন্তা করলে আমি কী বোঝাতে চাচ্ছি বোঝা যাবে ইংশা আল্লাহ।
কারও চরিত্র, স্বভাব খারাপ হবার পিছনে বাহ্যিক প্রভাব থাকতে পারে এবং এই প্রভাবকের মধ্যে জিন/জাদু/বদনজর “থাকতে পারে”।
কাজেই রুকইয়াহ করার পর যদি এসব চলে যায় তাহলে বুঝতে হবে বদনজর/জিন/জাদুর প্রভাব এখানে ছিল। আর যদি রুকইয়াহ করার পর রুকইয়াহ সংক্রান্ত অন্য কোনো শারিরিক/মানসিক সমস্যা না থাকে শুধু এই ধরনের সমস্যাই থেকে যায় তাহলে বুঝতে হবে তার নফসের উপরেও মেহনত করতে হবে। বড়রা একে এসলাহে নফল বা নফসের শুদ্ধিকরণ বলে থাকেন। সেজন্য হক্কানী আলেমদের পরামর্শে জীবন সাজাতে বলেন।
৬। এখন সবই হল, রুকইয়াহ পরামর্শ নিলাম, হক্কানী আলেমদের পরামর্শও নিলাম; কিন্তু ঐ নেয়া পর্যন্তই। দুইদিন রুকইয়াহ করার পর আর ভাল্লাগে না, আর পারি না, আর কতদিন করবো রুকইয়াহ; হুজুর এত কঠিন কঠিন আমল দিল কেন, হুজুর নিজেই পারবে না এসব করতে, হুজুরের আর কাজ কি, সারাদিন শুয়ে বসে থাকে!
এমন করলে কারও সাধ্য নেই অবস্থার কোনো উন্নতি করার। মূলত উক্ত ব্যক্তি নিজেই সুস্থ হতে চায় না, ভান ধরেছে আমিতো হতে চাই কিন্তু পারি না।
৭। পরিবারের যে লোক আক্রান্ত সে অনেক সময় রুকইয়াহ করতে চায় না। তখন অন্য কেউ তার জন্য রুকইয়াহ করতে পারবে। এই ব্যাপারে বিস্তারিত এখানে পাওয়া যাবে।
৮। মনে রাখতে হবে, মানুষের যত সমস্যা তার সবকিছুই জন্যই কুরআন। কাজেই কুরআন তেলাওয়াত কখনই ক্ষতির কারণ হবে না (যালিম ছাড়া)। কাজেই চিন্তার কিছু নেই। তেলাওয়াত আর দুয়া করতে থাকতে হবে। সবর করতে হবে।
আল্লাহই ভাল জানেন।

মন্তব্য করুন