Ruqyah Support BD

রাকি ও রোগীর সম্পর্ক

বিসমিল্লাহ!

ফেসবুকের কিছু আইডি নজরে নজরে রাখি। এসব আইডিকে দেখি সব রাকি/রুকইয়াহ রিলেটেড ব্যক্তিবর্গের কমেন্টে কমেন্টে বেশ এক্টিভ। প্রোফাইলে গেলে বিরাট দ্বীনদারও মনে হয়। আবার কিছু কিছু পোস্ট দেখতে মনে হয় (প্রায় নিশ্চিত) তারা শক্ত সমস্যায় আক্রান্ত। কিন্তু রুকইয়াহ করে না। কোনো অদ্ভূত কারনেই হোক তারা সবই বুঝে কিন্তু রুকইয়াহ করে না। এসব যখন সামনে আসে তখন সন্দেহ ঢুকে যায়, কেন করে না? যদি না-ই করে তাহলে রাকিদের কমেন্টবক্সে বক্সে তাদের কাজটা কি? তাদের ত্রুটি অনুসন্ধান করা? তাদের গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করে বিকৃত আনন্দ লাভ করা?

হবে হয়তো। এসব ব্যক্তি থেকে সকল রাকিদের আল্লাহ হেফাজত করুন। আমীন (১)

এই ক’বছরে কম পোস্ট দেখিনি। আলহামদুলিল্লাহ। কিছু কিছু কেস থাকে যা স্মরণ রাখার মত। সব ডাক্তারেরই এমন কিছু রোগী থাকে যাদের ব্যাপারে তারা কনসার্ণ থাকেন। আমার কাছে এখন পর্যন্ত এমন স্মরণ রাখার মত যেসব কেস এসেছে সবাই “রুকইয়াহ”র ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। খেয়াল করে দেখলাম তাদের মধ্যে একটা কমন প্যাটার্ণ আছে। তারা কিছুদিন রুকইয়াহ করে হাপিয়ে যায়। যেকোনো কারনেই হোক, আর করতে পারে না। এমন না তারা শুধু সেলফ রুকইয়াহ করে, বরং সরাসরি রুকইয়াহও করে। কিন্তু তাদের ফোকাস রুকইয়াহ থেকে সরে যায়। তারা চিন্তিত হয়ে পড়ে, কে আমাকে জাদু করলো, কতগুলা জিন আছে, আশিক জিন আছে নাকি, কতগুালো জাদু করলো, জাদুর জিনিস কোথায় আছে ইত্যাদি ইত্যদি জানতে হবে। এমন না এইগুলা জেনে তাদের বিশেষ কোনো লাভ আছে বা কিছু করতে পারবে। কিছুই করতে পারবে না। তাদের নফসের চাহিদা পূরণ হওয়া ছাড়া আর কিছু হবে না। অথচ যদি এই ফোকাসটা রুকইয়াহ করার ক্ষেত্রে ধরে রাখতো তবে আল্লাহ চাইলে দুই জাহানেই তারা উপকারী হত।

এরা আমার হক্ব নষ্ট করেছে বলেই মনে করি। (২)

হোয়াটসএপ নাম্বারটা কেন দিয়েছি আর সেখানে কার্টেসী কেমন হবে এটা নিয়ে আগেও লিখেছি। পরিচিত না হলে হোয়াটসএপে কল রিসিভ করি না। নিয়ম হল গ্রুপে পোস্ট করবেন। গ্রুপে পোস্ট করতে কোনো ঝামেলা হলে পেইড কন্সালটেন্সি নিবেন। টাকার সমস্যা থাকলে সরাসরি আমাকে ফোন করবেন। (ফ্রী থাকলে ফোন ধরি নাহলে ধরি না) । এখানেও সমস্যা থাকলে হোয়াটসএপে টেক্সট করবেন। লিখতে অসুবিধা হলে ভয়েস মেসেজ দিবেন। এটাই শেষ ধাপ।

কেউ কেউ কথা নেই, বার্তা নেই, হোয়াটসএপে সরাসরি ফোন করেন। মানে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে চান। গ্রুপে পোস্ট করবেন না, সিরিয়াল থেকে বাচলেন। পেইন কন্সালটেন্সি নিবেন না, টাকা বাচালেন। সরাসরি ফোন করবেন না, টাকা শর্ট আছে। মেসেজ দিবেন না, টাইপ করতে কষ্ট লাগে। ভয়েস মেসেজও দিবেন না, রেকর্ড থেকে যাবে তাই। সরাসরি হোয়াটসএপে কল দেন।

এট সস্তা না আসলে, এত সস্তা না!

কিছুদিন আগে একজন প্রায় ১৬ হাজার শব্দের মেসেজ দিয়েছেন। মন দিয়ে পড়েছি। পরামর্শ দিয়েছি। তার এই প্রচেষ্টা আমি এপ্রিশিয়েট করি।

মেয়েদের গলার স্বরের পর্দা আছে জানেন তো? আপনি চাইলেই পরপুরুষকে গলা শোনাতে পারেন না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শরিয়ত ছাড়া দিয়েছে। যেমন, মেয়েদের চেহাড়া পর পুরুষকে দেখানো যায় না। কিন্তু ডাক্তারের কাছে গেলে দরকার হলে দেখানো যাবে। এর মানে এই না আপনি গিয়েই নেকাব খুলে রেডি হয়ে গেলেন। যে ছেলে বিয়ের জন্য আপনাকে দেখতে এসেছে আপনি থাকে চেহাড়া দেখাতে পারবেন, তার চেহাড়াও দেখতে পারবেন। এর মানে এই না, তার বাবা, চাচা, ১৪ গোষ্ঠীকে চেহাড়া দেখাবেন।

যেখানে আজমতের উপর আমল করার সুযোগ আছে সেখানে রুখসত (ছাড়) গ্রহণ না করা নিজের আল্লাহভীতির প্রমাণ। আপনার সুযোগ আছে টাইপ করার, আপনি গলা শোনাবেন কেন? আপনার সুযোগ আছে ভাই, বাবা, স্বামীকে দিয়ে ফোন করার, আপনি কেন সরাসরি ফোন করবেন? আজমতের উপর আমল করতে চেষ্টা করেন। ঈমানে স্বাদ বুঝতে পারবেন অন্তরে। (৩)

আমি রুড, রাগী, এরোগেন্ট – এসব বহু কথা শুনেছি এই ক’বছরে। আপনাকে যদি আগে থেকেই কেউ হিন্টস দিয়ে থাকে এসব নিয়ে তাহলে আমার যেকোনো কথাই আপনি উলটা বুঝবেন।

আর আপনি সমস্যা আক্রান্ত বলে, আমি একটা ইসলামী গ্রুপে এডমিন বলে, আপনার সাথে আমার নরম গলায় কথা বলতে হবে শরীয়তের নির্দেশনা এমন না।

“আল্লামা জাজারি রহমাতুল্লাহি আলায়হি লিখেছেন- “রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুরুষকে তার স্ত্রী ছাড়া কোনো পরনারীর সামনে এমন নরমভাষায় কথা বলতে বারণ করেছেন, যা নারীদের পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট করে।” (আননিহায়া)

{সোর্সঃ যৌবনের মৌবনে, পৃষ্ঠা-১৪৯)

ভাইয়েরাও মাঝে মাঝে এমন আচরণ করেন যে সবর করা কঠিন হয়ে পড়ে। দেখা যায়, কথা নেই বার্তা নেই, হোয়াটসএপে কল। এরপর সমস্যা বলার আগে নানান প্রশ্ন, ব্যক্তিগত প্রশ্ন (খুবই অপছন্দ এটা), এরপর অপ্রয়োজনীয় বিষয় জিজ্ঞেস করেন। কবিরাজ ভাবেন, কবিরাজ হিসেবে ট্রিট করেন। পরামর্শ দেয়ার পর সমস্যা বলতে শুরু করেন। এতক্ষন সিন্দুকের ভিতরে লুকিয়ে রেখেছিলেন এসব!

বিষয়টাতো এমন না, একটা নাম্বার পেয়েছি, ফোন করি। আগে জানি, কাকে ফোন করছি, কেন করছি। সে কি করে, কি বিষয়ে পরামর্শ দেয়। যারা ফোন নাম্বার শেয়ার করেন তাদেরও এখানে অবহেলা। তারা রুকইয়াহ বিষয়টা বুঝিয়ে দেন না। ফোনে কি এখন ক্লাস নিব? না সেটা সম্ভব।

আপনার সাথে আমার কথাবার্তা হবে সিম্পল। আপনি সমস্যা বলবেন, আমার পরামর্শ দেয়ার মত মনে হল পরামর্শ দিব। এর বাইরে যত শব্দ আছে সেগুলো গিলে ফেলা দুই পক্ষের জন্যই ভাল। কার অন্তরে কখন কোন ঘুনপোকা বাসা বাধে বলা যায় না। (৪)

মন্তব্য করুন