Ruqyah Support BD

কিছু ভুল ধারণা ও সমস্যা আক্রান্তদের জন্য কিছু কথা…

কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু

১। “জিনে আক্রান্ত রোগী সেলফ রুকইয়াহ করে ভাল হয় না। রাকি লাগেই।” – আমি এই আক্বিদায় বিশ্বাস করি না। কাজেই যারা এই আক্বিদার প্রচারক, প্রশ্ন তাদের করবেন।

২। অমুকে জাদু করেছে, অতগুলো জাদু করেছে – আমি এভাবে কথা বলি না। এই টাইপের প্রশ্নের ৯৫% উত্তর দেই না, স্কিপ করি। ৪ % ক্ষেত্রে বলি জানি না। আর ১% ক্ষেত্রে বলি “জাদু আক্রান্তরা এমন দেখে/করে, হতেও পারে, অনেক সময় সত্যি হয়” । এরপরেও মানবিক দুর্বলতায় পড়ে কখনো কাউকে যদি বলে থাকি “অমুকেই জাদু করেছে” তাহলে ১০০% ভুল কাজ করেছি। এটা আমার বলা উচিত হয় নি, কোনোভাবেই না। ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকার চেষ্টা করবো ইংশাআল্লাহ।

৩। রাকিদের রুকইয়াহর ভিডিও শেয়ার করা পছন্দ করি না। এতে কোনো উপকার আছে বলে মনে করি না।। আমরাও প্রথমদিকে দুই একটা ভিডিও দিয়েছিলাম। এটা বুমোরাং হয়েছিল। আমাদের ভুল থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি। অন্যকেউ চাইলেও নিতে পারে। আমরা আমাদের কাজ করে গিয়েছি, এখনো করছি। প্রসার আল্লাহ তায়ালা করেছেন।

৪। হাসাদের রুকইয়াহ করবেন। হাসাদ হল অন্যের ভাল জিনিস দেখে সেটার ধ্বংস কামনা করা। কিভাবে করবেন?
ক- সুরা ফালাক, নাস তেলাওয়াত করা।
খ- বিসমিল্লা-হি ইউবরি-কা ওয়া মিং কুল্লি দা-য়িও ইয়াশ ফি-কা ওয়া মিং শার্‌রি হা-সিদিন ইযা- হাসাদা ওয়া শার্‌রি কুল্লি যি- আ’ই-ন।
এইগুলো বেশি বেশি পড়া। অর্থ মুখস্থ করে অর্থের দিকে খেয়াল রেখে পড়তে পারলে আরও ভাল। আর বদনজরের নিয়মে গোসল। ঐযে, বালতির পানিতে হাত রেখে যেটা সেটাই। কয়েকদিন করলেই হাসাদ কেটে যাবে ইংশাআল্লাহ। (মাসে তিনদিন বদনজর/হাসাদের রুকইয়াহ করা উচিত)

৫। আপনাকে পরামর্শ দেয়ার মত কেউ নেই? কোনো সমস্যা নেই। কাউকে লাগবে না। আপনাকে কি সবচাইতে শক্তিশালি রুকইয়াহর কথা বলবো? যান বলেই দিলাম।
পড়বেনঃ
ক। সুরা ফাতিহা
খ। আয়াতুল কুরসি, সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত।
গ। সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস।
ঘ। আর এই লিংকের দুয়াগুলো।
https://www.facebook.com/groups/ruqyahbd/permalink/1296898760497440
পড়ে নিজের হাতের তালুতে ফু দিয়ে সারা গায়ে মাসেহ করতে পারেন। পানিতে ফু দিয়ে খেতে পারেন, গোসল দিতে পারেন। তেলে ফু দিয়ে মালিশ করতে পারেন।
যত বেশি সম্ভব তত বেশি পড়বেন। যত পড়বেন তত ভাল ইংশাআল্লাহ। এরচে’ শক্তিশালি কোনো রুকইয়াহ আমার জানা নেই। এর বাইরে বরই পাতার গোসল, সুরা বাকারার তেলাওয়াত, জাহান্নাম ও আযাব সংক্রান্ত আয়াতের তেলাওয়াতও উপকারী রুকইয়াহ। তবে যাই পড়বেন, উচ্চারন সহিহ এবং অর্থ বুঝে তেলাওয়াত করতে পারলে সর্বোচ্চ ফায়দা। যা পড়া হবে তার বিপরীত আমল যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। উদাহরণঃ পড়লাম পর্দা সংক্রান্ত আয়াত, আর চলাফেরা করলাম বেপর্দা হয়ে।

৬। কোনো একটা আয়াত পড়ার পর জিনআক্রান্ত কেউ যদি চেচাঁমেচি করে তাহলে ঐ আয়াত/দুয়া তার জন্য খুব ইফেক্টিভ বা ঐ আয়াত/দুয়া/কথার মাধ্যমে কোনো কিছু বোঝায় – এই সিদ্ধান্তে আসাটা এক ধরনের ধোকা। রুকইয়াহ সবচে ইফেক্টিভ সেটাই যেটা সুন্নাহসম্মত। যেমন, আয়াতুল কুরসি শয়তানের বিরুদ্ধে শক্তিশালি অস্ত্র। এখন জিনের রোগির উপর আয়াতুল কুরসি পড়া হল কিন্তু সে চুপ। এরমানে এই না আয়াতুল কুরসির দ্বারা তার কিছুই হয় নি। এরপর আগডুম বাগডুম পড়া হল আর সে দুনিয়া উলটে ফেললো, এর মানে এই না আগডুম বাগডুম খুব ইফেক্টিভ। শয়তানের নাটকে আস্থা রাখার কিছু নেই, বিন্দুমাত্র বিশ্বাস করার দরকার নেই। ধোকা থেকে সাবধান থাকি।

৭। বদনজর, জিন, জাদুতে আক্রান্তরা প্রচুর মিথ্যে কথা বলে। দেখা গেল, আমি বললাম একটা, সে বুঝলো আরেকটা। আরেকজনের কাছে গিয়ে বললো সম্পূর্ণ উল্টাটা। কাজেই সাবধান থাকা জরুরি। এটাও শয়তানের চাল ছাড়া কিছু না।

 


নোটঃ ১। আমি আশাকরি আমাদের গ্রুপের অন্য এডমিনরাও আমার সাথে একমতই হবেন।
২। আমার পছন্দ-অপছন্দ কোনো শরঈ দলিল নয়।
৩। শেষ ৫টি পয়েন্ট বিশেষ উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। বিশেষ বক্তব্য/ঘটনাকে কেন্দ্র করে। অন্যরা এইগুলো নিয়ে মাথা না ঘামাই।

লেখা:  আহমাদ রবিন

মন্তব্য করুন