(বুঝতে ভুল না করি। আমাদের আপত্তি বমি করা না করা নিয়ে না, আপত্তি বমি করানোর পদ্ধতি নিয়ে।)
বদনজর, জিন, জাদুতে আক্রান্তরা যখন রুকইয়াহ করে বা এমনিতে কোনো ইবাদত করতে যায় তখন বমি হতেই পারে। বরং বমি হওয়াটা অনেক সময়ই স্বস্তির কারণ হয়। শরীর ভাল লাগে। আততিব্বুন নববীতে বমি অনেকগুলো উপকারীতার কথা এসেছে। সেগুলো আলোচনা এখানে করতে চাই না। মজার ব্যাপারে হল, এই বইয়ে (বাংলাটায়) বমি করানোর কোনো পদ্ধতি আলোচনা করা হয়নি। বমির কিছু অপকারিতা ও সতর্কতাও আলোচনা করা হয়েছে।
আব্দুল্লাহ ভাই যখন বমির বিষয়টা পোক করেছিলেন তখন কয়েকজনের পোস্ট দেখেছি তাকে ক্রিটিসাইজ করে পোস্ট করতে। অথচ তারা প্রসঙ্গই বুঝে নি। আল্লাহ হেদায়াত দিক তাদের। হেদায়াত তাদের ভাগ্যে না থাকলে তাদের ক্ষতি থেকে উম্মাহকে হেফাজত করুন। আমীন।
একথা মানতেই হবে বমি একটি কষ্টদায়ক প্রক্রিয়া। এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার বিপরীতও বটে। খাদ্যনালী দিয়ে খাবার নিচে যাবে এটাই স্বাভাবিক, আর বর্জ্য বের হবে পিছন দিয়ে। যদি বিপরীত হয় তাহলে সেটা কষ্টসাধ্য হবে। এটাও মাথায় রাখতে হবে কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা সবার এক না।
কারও যদি বমি করার এতই ইচ্ছা থাকে তাহলে সে বমির ভিডিও দেখতে পারে, ওয়াক ওয়াক সাউন্ড শুনতে পারে। এমন কিছু খেতে পারে যা অতিরিক্ত তিতা, বিকট গন্ধযুক্ত। অল্পতেই কাজ হবে ইংশা আল্লাহ। জিন, জাদুগ্রস্থরা শক্তিশালি পানি তৈরি করে খেতে পারে। অর্থাৎ সিহরের আয়াতগুলো বেশি বেশি করে পড়ে পানিতে ফু দিবে। এরপর খাবে। এমনিতে পড়া পানি খেতে বললে ১-৩ বার করে পড়ে ফু দেয় লোকজন। বেশি বেশি বলতে ৭০ বার করে পড়তে পারে প্রতিটা আয়াত, ১০০ বার করে পড়তে পারে, ৫০০-১০০০ বার করে পড়তে পারে। ক্ষতিকর জিনিস যদি বমির সাথে না বের হয়ে নিচে দিয়ে বের হয় তাহলে আলহামদুলিল্লাহ। আর বমির মাধ্যমে বের হলেও ইংশা আল্লাহ উদ্দেশ্য সফল হবে।
[এইগুলো আমার কথা। আমার সাথে সবার একমত হতে হবে এমন না।]
আরও পড়ুনঃ বমনের মাধ্যমে পেট খালি করানো এবং আরও কিছু কথা
added by almahmud:
তিরমিযির হাদিসে আছে, আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত “রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বমি করেছিলেন, এরপর ইফতার করেছেন, এরপর ওজু করেছেন”।
এটা ওযুর মাসয়ালা। এই হাদিসের কারণে আমরা মক্তবে পড়ি “মুখ ভরিয়া বমি হওয়া” ওযু ভঙ্গের কারণ। এই হাদিসের সাথে অসুস্থ ব্যক্তিদেরকে সমুদ্রের পানির মত লবণাক্ত ১০-২০লিটার পানি খাওয়ানো আর বমি করানোর সম্পর্ক নেই।
যারা একেবারে ভিন্ন প্রসঙ্গের এই হাদিস দেখিয়ে (আসলে শুধু আরবি দেখিয়ে, তরজমা না করে) বলতে চায় মানুষকে গ্যালন গ্যালন লবণ পানি খাইয়ে বমি করানো শরিয়া সমর্থিত রুকইয়ার কাজ, যারা ঝাড়ফুঁককারিদের ম্যালপ্রাক্টিসকে নববি চিকিৎসা ও এলাহি চিকিৎসা আখ্যা দেয়, মনগড়া অপচিকিৎসাকে নবিজি সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে সম্পর্কযুক্ত করে (নাউযুবিল্লাহ) এরা নিশ্চিতভাবেই কোরআন, হাদিস ও শরিয়া নিয়ে আরও অনেক অনেক জালিয়াতি করতে পারে এবং করে।
এদের ব্যাপারে সাবধান থাকা দরকার।
মন্তব্য করুন