Ruqyah Support BD

বিক্ষিপ্ত অগোছালো কিছু কথা…

অদ্ভুত কিছু অভিজ্ঞতা হচ্ছে ইদানীং, বিশ্বাস করুন রাসেল ভাই, এসবের ব্যাখ্যা খুজে ক্লান্তবোধ করি।
ক.
কিছুদিন আগে সেন্টারে বসেছিলুম রোগী দেখার জন্য। মহিলা এসেছে বাচ্চাকে সাথে নিয়ে, পিচ্চি মেয়ে মাস্ক পরে আছে, মহিলার মুখ খোলা। বিষয়টা এক ভাইয়ের সাথে গল্প করলাম। উনি বললেন – “বাসায় যাচ্ছিলাম সেদিন, সামনে এক বাইক পড়লো, সামনের লোকটা ডাবল মাস্ক পরে আছে, পেছনে সিটে স্ত্রীর পুরা চেহারাই খোলা!”
আসলে শয়তান এদের পাপ কাজকে মজাদার বানিয়ে দিয়েছে।
খ.
মাইগ্রেনের সমস্যা আছে আমার, এজন্য আওয়াজ, আলো, ঠাণ্ডা সহ্য হয় না। আওয়াজে বেশি সমস্যা। কানের কাছে হর্ণ বাজলে মেজাজ চটে যায়। কয়েকবার বাজলে মাথাব্যথা শুরু..। যাত্রাবাড়ীর মোড়ে গাড়ির প্যাঁপু শুরু হলে যেন চোখে ঝাপসা দেখতে থাকি।
যাহোক, কোনো কোন রুকইয়াহ সেন্টারের ভেতরের পরিবেশ মিউজিক স্টুডিওর মত। দরজা-জানালা ক্লোজ করে, বিভিন্ন কর্ক লাগিয়ে সাউন্ডপ্রুফ করা রুমে হাই ভলিউমের সাউন্ড আর ইকোওয়ালা মাইকে রাকি রুকইয়াহ পড়ছে, এ যেন এক মহাযজ্ঞ। অনলাইনে দেখে/শুনেই কেমন যেন সম্মোহিত বোধ করি।
আমি ভাবতেসিলাম, আমার মত শারীরিক কন্ডিশনের কেউ যদি ওখানে যায়, সমস্যা থাকুক আর না থাকুক, মাথাব্যাথা, মাথাঘোরা, চোখে ঝাপসা দেখা, কিছুক্ষণ পর ক্লান্ত হয়ে ঘুম… ইত্যাদি ইত্যাদি এমনিতেই চলে আসবে। রাকি ভাইয়াও হয়তো বলে দিবে আপনার সাথে হাতি-জিন বা কচ্চপ-জিন আছে। মাথার গিট্টার রুকইয়াহ শুনবেন দিনে ৭১ঘন্টা।
আসলে ভাই, সত্য বলতে “ওহী কিংবা ইলহাম ছাড়া গায়েবের বিষয়ে এত নিশ্চয়তার সাথে মন্তব্য করা মুমিনের সাথে যায় না, এটা যাদুকর-গণকদের অভ্যাস। আমাদের থেকে এমনটা কাম্য না।”
আল্লাহ আমাদের হিদায়াত দিক, সহিহ বুঝ দিক। আমিন।
গ.
আরেকটা জিনিসের ব্যাখ্যা রাসেল ভাই আমি এখনও পাইনি,
জিন পেটানোর মাঝে কি আসলেই কোনো হিরোইক ব্যাপারস্যাপার আছে নাকি? আমাদের রাকি ভাইয়েরা যেভাবে ফেসবুকে শো-ডাউন করে, মনে হয় যেন মুসলিম সেনাপতি কোনো অঞ্চলে ইসলামি শাসন কায়েম করে এসেছে!!
জিন তাড়ানোর কথা বললে তো ভাই, হাসানাতের মত নাস্তিক কিংবা আহসান হাবিব পেয়ারের ভণ্ডও পারতো। পাশের গ্রামের অমুক চাচা ছিল, যিনি ১০টা কথার বললে সাথে সাথে ৪-৫টা গালি ফ্রি দেন, সুরা ফাতিহাটাও পুরাপুরি শুদ্ধ না, ছোটবেলায় দেখেছি উনিও ভালোই জিন তাড়াতে পারতেন। একটা শয়তান একটা মানুষের শরীরে আটকে আছে, আপনি নিজের রাগ মেটাতে ইচ্ছামত পিটাচ্ছেন – এখানে তো ভাই পৈশাচিক তৃপ্তি ছাড়া অন্য কিছু চোখে পড়ছে না।
ঘ.
কিছু ভাইরা রোগী একটু ঝিমালেও মার লাগিয়ে দেয়। আমাদের প্রবৃত্তিকে সংযত করা উচিত।
কদিন আগে পরিচিত একভাই এক বোনের সমস্যার ব্যাপারে কথা বলছিলেন – তিনি এক রাক্বির কাছে দুইবার রুকইয়াহ করানোর পর টর্চারের কারণে এমন আতংক ধরে গেছে যে, রুকইয়াই বন্ধ করে দিতে চাচ্ছিলেন। আমি রোগীর কথা শুনে বুঝছিলাম উনাকে এমন অবস্থায় পেটানো হয়েছে যে উনার সম্পূর্ণ সেন্স ছিল, এবং পুরা মারটা উনার ওপরেই পড়েছে!!
আমাদের রাক্বি ভাইয়েরা তাত্বিক জ্ঞানকে থোড়াই কেয়ার করে দুদিনের অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে যেভাবে নফসানিয়্যাতের চর্চা শুরু করেছেন, আপনাদের ভ্রষ্টতা আর জুলুমের সীমা যে কোথায় গিয়ে শেষ হবে, একমাত্র আল্লাহই ভালো জানে।
(দোয়া করি, যে আল্লাহ রুকইয়াহ শারইয়ার মেহনতকে এই দেশে পুনর্জীবন দিয়েছেন, উনিই যেন এসব ফিতনা থেকে এই মেহনতকে হিফাজত করেন। আমিন, ইয়া রাব্বাল আলামিন।)