গ্রুপের যখন প্রথম প্রথম কাজ শুরু করি তখন মনে করতাম, বদনজরের আক্রান্তদের যদি জাদুর রুকইয়াহ দেয়া হয় বা জাদুতে আক্রান্তদের যদি বদনজরের রুকইয়াহ দেয়া হয় তাহলে খুব বড় ধরনের ভুল হয়ে যাবে। এতে যাদেরকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এই ব্যাপারে ইমরান ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করার পর উনি দ্বিমত করলেন। আমার ভাল লাগলো না। চুপ থাকলাম।
ইমরান ভাই যে সঠিক সেটা বুঝলাম বেশ কিছুদিন পর।
রুকইয়াহতে মূলত করা হয় কুরআন তেলাওয়াত, পানি খাওয়া, গোসল ইত্যাদি। আর প্রায় সব রুকইয়াহর তেলাওয়াতে সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, তিনকুল থাকে। বাকি কিছু আয়াত এদিক সেদিক থাকে।
কাজেই সুস্থতার জন্য যদি তেলাওয়াত করা হয় তাহলে একেবারে সিহরের আয়াতই পড়তে হবে বা বদনজরের আয়াতই পড়তে হবে, না পড়লে সেটাতে উপকার হবে না- বিষয়টা এমন না। রুকইয়াহ সংক্রান্ত সমস্যার জন্য সমগ্র কুরআনই উপকারী। আর হাদিসের বিভিন্ন দুয়াতো আছেই।
প্রায় রোগীকেই প্রথমে বদনজরের রুকইয়াহ করতে দেই। এর মানে এই না সে বদনজরের রোগী। কোথাও এই কথা বলি না যে, আপনি বদনজরের রোগী, আপনি বদনজরের রুকইয়াহ করেন। আপনি সিহরের রোগি, আপনি সিহরের রুকইয়াহ করেন। কোথাও বলি না। আমাদের গ্রপের কেউ বলে তেমনটাও চোখে পড়ে নি। স্পষ্ট জিন-জাদুর রোগিকে বদনজরের রুকইয়াহ করতে দিয়েছি।
- এতে বোঝা যাবে সে আসলেই রুকইয়াহ করতে আগ্রহী কিনা।
- বোঝা যাবে রুকইয়াহ করার সামর্থ্য তার আছে কিনা। নাকি রাকির কাছে যাওয়া লাগবে।
- করলে টুকটাক সমস্যা চলে যাবে। জিন-জাদুতে আক্রান্তদের বদনজরের কিছু সমস্যা থাকে।
- যে রাকির কাছে যেতে চায় না বা যাবার সামর্থ্য নেই তাকেও দেই।
আপনার সমস্যা যেটাই হোক, আপনি কুরআন তেলাওয়াত করলে উপকার পাবেন। পানি পড়ে খেলে, গোসল করলে উপকার পাবেন।
কাকে কেন কি পরামর্শ দিয়েছি সেটা আমি জানি। এটা অন্যদের জানানোর প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। আল্লাহর কাছে এটাই দুআ করি যেন সর্বোচ্চ ভাল পরামর্শটা দিতে পারি।
শাইখ ওয়াহিদ আব্দুস সালাম বালি তার বইয়ে (ইংরেজি ভার্সনে) জিন সংক্রান্ত অধ্যায়ে Some notes for the exorcist টপিকে আলোচনা করতে গিয়ে সেলফ রুকইয়াহর প্রসঙ্গ এনেছেন। জিন হাজির না হলে পরামর্শ হিসেবে ১২ টা পয়েন্ট লিখেছেন, ১ মাস ফলো করতে বলেছেন। সেখানে তেলাওয়াত সহ নানান পরামর্শ রয়েছে। তিনি যদিও সেলফ রুকইয়াহ টার্মটা ব্যবহার করেন নি তবুও কি বলা যাবে তিনি ভুল করেছেন?
ভুল হবে যদি যেটা রুকইয়াহ না সেটাকে রুকইয়াহ বলি। রুকইয়াহ নববী চিকিৎসা পদ্ধতির একটা ধারা। এমন আরও ধারা আছে। সবগুলাকে মিলিয়ে গোজামিল দিয়ে যদি ব্যবসার জন্য বা না বুঝে রুকইয়াহ বলে চালিয়ে দেই তবে সেটা হবে ভুল।
মন্তব্য করুন