Ruqyah Support BD

অফলাইনে রুকইয়াহ বিষয়ক প্রোগ্রাম করা

ভাল শিক্ষা পাচ্ছি ইদানিং!
সুনির্মল বসু কি মনের দুঃখে লিখেছিলেন নাকি মনের আনন্দে লিখেছিলেন দ্বিধায় পড়ে গিয়েছি, “বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র” !
রুকইয়াহ নিয়ে অনেক প্রশ্নের জবাব আমি দেই না। জানা থাকলেও দেই না। আমার কাজ পরামর্শ দেয়া, প্রশ্নের জবাব দেয়া না। কে করেছে, কেন করেছে, কেন সমস্যা কাটছে না- এসব প্রশ্ন ইগনোর করি। তবে যারা বার বার পুশ করে তাদেরকে বলি। যখন বলি তখন আবার তাদের হজম হয় না।
ভাই, আপনার প্রবলেমের জন্যতো আমি দায়ি না। আমাকে কেন জিজ্ঞেস করছেন! আজিব ব্যাপার। যারা দায়ি তাদের জিজ্ঞেস করেন, চার্জ করেন, শোধ নেন। কেন তারা আপনার সাথে এমন করলো। কাউকে না পেলে নিজেকে দোষ দেন, নিজের অভিভাবককে দোষ দেন। ছোটবেলা আপনাকে দ্বীন শিখিয়েছিল? আপনি বালেগ হবার পর থেকেই সালাত, মাসনুন আমলে রত থাকতেন? আপনার অভিভাবক আপনাকে শেখানোর ব্যবস্থা করেন নি, আপনার হুজুরেরা শিখায় নি, তাদের দোষ দেন। তাদেরকে চার্জ করেন। কেন তারা নিজেরা শিখেনি, আপনাকে শিখায় নি। তাদের অবহেলার ফলে যে আপনি আজকে জ্বিন-জাদুতে আক্রান্ত সে ব্যাপারে কৈফিয়ত দাবি করেন। না পারলে নিজেকে জিজ্ঞেস করেন। মুসলিম কি, মুসলিম হিসেবে আপনার দায়িত্ব কি, তাকদির কি -এসব বিষয়ে আপনার পড়াশুনা করা হয়েছে কিনা। করা না হয়ে থাকলে পড়েন। আমার কাছে কি?
আমাকে ইনিয়ে বিনিয়ে মিথ্যে কথা বলার জন্য সাজেস্ট করার দরকার নেইতো। অবশ্য আপনাদের একটা সুবিধা আছে, কিছুই হলেই বাঙালীর তিন হাতের সর্বশেষ হাত অজুহাত দিতে পারবেন যে, আমিতো জিনের রোগি। আমাকে এভাবে বলছেন কেন! আমিতো ভুল করতেই পারি। আপনি ঠিক করে দিবেন না!
ঠিক করে দেয়ার দায়িত্ব আমার না। ঠিক করে দিতে গেলে কয়েকদিন পর আরও বড় বড় ব্লেম দিবেন এটা নিশ্চিত। এরচে’ স্থানীয় আলেমদের কাছে যাবেন। তারা আপনার আমলে কোথায় ত্রুটি বিচ্যুতি আছে খুজে দিবেন।
এক ভাই উদ্যোগ নিলেন সেমিনার করবেন। আমরা (বিশেষ করে আমি) বললাম ঠিক আছে, করেন, আমরা যতটুকু পারি হেল্প করবো। ভাই মহা উৎসাহে মাঠে নামলেন। ১-২ শ’ মানুষ হবে চিন্তা করলাম আমরা। বিরাট অডিটোরিয়াম ভাড়া করা হল মোটা টাকার বিনিময়ে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা রাকিদের দাওয়াত দেয়া হল। হাজার দুয়েক লিফলেট বিতরন করা হল। এই লিফলেট বানাতে কি কত শ্রম যে গেল, সুবহানাল্লাহ! এভাবে না ওভাবে, ওভাবে না সেভাবে, এই লিখতে হবে, ঐ লিখলে হবে না।
ভাত ছিটালে নাকি কাকের অভাব হয় না। কিন্তু এত এত লিফলেট (লিফলেটের খরচ কিন্তু সরকার দেয় নি) বিতরন করেও পর্যাপ্ত সংখ্যক অংশগ্রহণকারী পাওয়া গেল না। ফেসবুকে সেলেব্রেটিরা সেমিনারের পক্ষে পোস্ট দিলেন। পোস্ট বুস্ট করা হল। তাও হল না। আমরা ধরে ছিলাম, অন্তত ২০ জন হলে সেমিনার করবো। ২০ জনও রেজিস্ট্রেশন করলো না।
অথচ ফি ছিল মাত্র ২৫০ টাকা। এই টাকার মধ্যে সকালে একবার হালকা নাস্তা দুপুরের খাবার ছিল। এই দুইটা খরচ দিয়ে খুব বেশি টাকা বাচতো তাও না। কমপক্ষে অডিটোরিয়ামের ভাড়াটা হয়ে গেলে বাজেট মেনটেইন করা কষ্ট হত না। সেটাও না হয় বাদ দিলাম। বাজেট আমরাই মিলিয়ে দিতাম। কিন্তু লোকতো হতে হবে। লোক না হলে কার জন্য সেমিনার!
অনেকেই বলেন, অমুক জায়গায় না করে তমুক জায়গায় করেন। ঢাকায় করেন, সিলেট করেন, চিটাগাং করেন, রাজশাহী করেন। অবস্থা দেখে মনেহয় লাখ লাখ লোক অপেক্ষায় আছে, আমরাই যেতে পারছি না।
এসব কারণে অফলাইনে প্রোগ্রামে আগ্রহ পাই না। কার জন্য প্রোগ্রাম করবেন? আম পাব্লিকের যোগ্যতাই নাই রুকইয়াহ নিয়ে প্রোগ্রামে আসার মত। ফেসবুকেও অনেকের নাই। কিছু মানুষ বুঝদার আছে তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে কানেক্টেড হয়েছে বলেই রুকইয়াহর মেহনত চলছে।
অফলাইনে এই কানেকশন সম্ভব?
আগে মাঠ তৈরি করতে হবে এরপর সেখানে মেহনত। মাঠ তৈরি করার জন্য সময় সময় লিফলেট বিতরন, আলেমদের পিছনে লেগে থাকতে হবে, আর ফাও সার্ভিস দেয়া বন্ধ করতে হবে। নিজের সময়কে দামি করতে হবে।
আমি বরাবরই কমদামে রুকইয়াহ দেয়ার পক্ষে না। দুনিয়ার সব কাজ হচ্ছে কেবল রুকইয়াহ হচ্ছে না টাকার জন্য। এদের জন্য আপনাদের মন কিভাবে গলে আল্লাহই ভাল জানেন।
হা, যারা বাস্তবিকই বিপদগ্রস্থ (ইনকাম নেই, ফ্যামিলি দেয় না) তাদের কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে বিবেচনা কখন করবেন? যখন তারা সেলফ রুকইয়াহ তে ঠিকমত ইফোর্ট দেয়।
এসব ঘটনা থেকে কে কি শিক্ষা নিলেন জানি না। আমি ভালই শিক্ষা নিয়েছি। এবার সেই শিক্ষা বাস্তবায়নের পালা।

মন্তব্য করুন